সকালে খালি পেটে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
সকালে খালি পেটে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা কি কি আছে তা জানার জন্য এই আর্টিকেলটি পড়ুন। খেজুর এমন একটি খাবার যা মানব শরীরের যত্ন নিতে সারা বছর এই ফলের উপর ভরসা রাখা যায়।
প্রতিদিন খেজুর খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী, বিস্ময়কর এই ফলটিতে রয়েছে অনেক স্বাস্থ্যকর উপাদান। মানবদেহের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে অনেক ধরনের ফল খেতে হয়।শরীরের কার্যকারিতা অন্নদা করার জন্য প্রয়োজন সমৃদ্ধ ফল যেমন খেজুর। নারী এবং পুরুষ উভয়ের জন্যই এই খেজুরে রয়েছে অত্যন্ত পুষ্টিকর উপাদান। সকালে খালি পেটে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য নিম্নলিখিত পুরো আর্টিকেল টি পড়ুন।
আরও পরুনঃ খালি পেটে কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা
পেজ সূচিপত্র ঃ সকালে খালি পেটে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
প্রতিদিন খেজুর খাওয়ার সঠিক নিয়ম
যেকোনো ফল বা খাবারের সঠিক পুষ্টিগুণ পেতে হলে এর কিছু নিয়মকানুন মেলে খেতে হয়। তেমনি খেজুর খাওয়ার কিছু সময় থাকে। শুকনো খেজুর নরম করার জন্য এবং হজম শক্তি বৃদ্ধির জন্য খেজুর সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে খাওয়া উত্তম, কেননা সারারাত পানিতে রাখার ফলে এন্ট্রি নিউটিয়েন্ট ভেঙে যায় এবং আইরন, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম এর মত পুষ্টিকর উপাদানের শোষণ বৃদ্ধি পায়। সাধারণত খেজুর খাওয়ার নিয়ম হলো নিয়মিত প্রতিদিন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে তিন থেকে সাতটি খেজুর খাওয়া যা মানব দেহে দ্রুত শক্তি এবং পুষ্টি সরবরাহ করতে দ্রুত সহায়তা করে।
প্রতিদিন খেজুর খাওয়ার উত্তম সময় হলো সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে রাতে ভিজিয়ে রাখা খেজুর খেলে মানব শরীরের বেশি উপকার পরিলক্ষিত হয়। প্রক্রিয়া যা চিনির বিকল্প মাধ্যম হিসেবে খেজুর ভেজানো অবস্থায় গুরু বা ব্লেন্ড করে খাওয় উত্তম। কিছু কিছু ক্ষেত্রে খেজুর খাওয়ার নিয়ম আলাদা হতে পারে, কেননা চাঁদের আছে তাদের খেয়াল রাখতে হবে কারণ খেজুরে ছাঁচ থাকতে পারে। অতিরিক্ত খেজুর খাওয়ার ফলে এলার্জি হতে পারে যেমন চোখ চুলকানো বা চোখ দিয়ে পানি পড়া।
খেজুরে বিদ্যমান স্বাস্থ্যকর পুষ্টিগুণ
সকালে খালি পেটে খেজুর খাওয়ার উপকারিতায় এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক চিনি, খনিজ, ভিটামিন এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবার। খেজুরের উপস্থিত এসব পুষ্টিগুণ মানবদেহে দ্রুত শক্তি জোগাতে সহায়তা করে, হজম শক্তি উন্নত করে, হাড়কে শক্তিশালী ও মজবুত করে এবং রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সহায়তা করে। খেজুরে থাকা প্রাকৃতিক শর্করা, গ্লুকোজ, ফ্রুকটোজ ও সুক্রোজ মানব শরিরের ক্লান্তি দূর করতে সহায়তা করে থাকে। কিন্তু খেজুরে প্রাকৃতিক চিনির পরিমাণ বেশি থাকে যার ফলে ডায়াবেটিস রুগীদের এর ঝুঁকি থাকে।
খেজুর অতিরিক্ত মাত্রায় খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা হেরে যেতে পারে বিশেষ করে এটি ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায়। এছাড়াও খেজুরে রয়েছে আয়রন,পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং ভিটামিন বি৬। খেজুরে বিদ্যমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মানুষের শরীরে থাকা ফ্রি রেডিকেল থেকে কোষকে রক্ষা করে মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। খেজুরে থাকা মেলাটোনিন মানব দেহে হরমোন নিঃসরণে সহায়তা করে যার ফলে রাতে ঘুম ভালো হয় এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে।
ব্রন বা ত্বকের জন্য উপকারি
প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে ত্বকের যত্ন নেওয়ার প্রচলন বর্তমান যুগে অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তাই খেজুরের বহুমুখী গুণাবলীর কারণে এই তালিকার একবারে উপরের সারিতে থাকবে। খেজুর শুধু স্বাস্থ্যের জন্যই না বরং এর জন্যও এর কার্যকারিতা অনেক। খেজুর ত্বকের জন্য খুবই উপকারী, খেজুরে থাকা প্রাকৃতিক এন্টিঅক্সিডেন্ট, খনিজ পদার্থ এবং ভিটামিন সি ও ভিটামিন ডি সরবরাহ করে ত্বককে মসৃণ ও উজ্জ্বল করে তোলে। খেজুরে বিদ্যমান ফলে ত্বক টানটান ও সুন্দর করে তুলতে সহায়তা করে যা বলে রেখা দূর করতে অত্যন্ত কার্যকরী। খেজুরের সাহায্যে তৈরি স্ক্রাব ত্বকের মৃত কোষ কে দূর করতে পারে যা ত্বক সতেজ করে তোলে।
ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে এবং ত্বককে সুন্দর করতে খেজুরের পেস্ট ব্যবহার করা যায়। খেজুরের তৈরি ফেসপ্যাক শুষ্কতা ও চুলকানি কমাতে সহায়তা করে যার ফলে এটি ত্বককে ও ময়েশচারাইজ করে তোলে। ফেসপ্যাক করতে শুকনো খেজুর সারারাত দুধে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর খেজুর থেকে বিচি আলাদা করে নিতে হবে তারপরে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে এই মিশ্রণটি তোকে ব্যবহার করতে হবে। খেজুরের সাথে মধু লেবুর রস বা দুধ মিশিয়েও করা যায় যার ফলে এই ফেসপ্যাক এর গুনাগুন অনেক বৃদ্ধি পায়। খেজুরে থাকা ভিটামিন বি৫, প্রোটিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ব্রনের সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে এবং ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত রাখে।
রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণ ও হাড় মজবুত করে
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে খেজুরের কার্যকারিতা অত্যন্ত উপকারী, কেননা এতে থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ স্বাভাবিক করতে সহায়তা করে। খেজুরে থাকা ম্যাগনেসিয়াম রক্তনালীর শিথিল করার মাধ্যমে রক্ত প্রবাহের উন্নতি সাধন করে। খেজুরের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুলো হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে। খেজুরের একটি পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম যা সোডিয়াম এর প্রভাব কমিয়ে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। খেজুরের বিদ্যমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রাতে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় এবং হৃদরোগের যদি কমাতে সহায়তা করে। খেজুরে থাকা খাইবার হৃদরোগের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে।
হাড় মজবুত করতে খেজুর গুরুত্বপূর্ণ একটি খাবার, কারণ খেজুরে রয়েছে ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, তামা এবং ম্যাঙ্গানিজ হাড়ের ঘনত্ব বাড়াতে এবং হাড়ের ক্ষয় রোধ করতে সহায়তা করে। ক্যালসিয়াম হাড় ও দাঁত গঠনে এবং তাদের শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ফসফরাস হারের মজবুত গঠন ও মেরুদণ্ডকে স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করে। ম্যাঙ্গানিজ এবং তামা হাড়কে সুস্থ ও শক্তিশালী রাখতে সহায়তা করে। ম্যাগনেসিয়াম হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি করতে এবং অস্টিওপেরোসিস প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। বয়স জনিত হাড়ের দুর্বলতা প্রতিরোধ করতে নিয়মিত খেজুর খাওয়া উচিত।
দৈহিক ও হজম শক্তির উন্নতি করে
দৈনিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য খেজুর একটি অত্যন্ত উপকারী খাবার কেননা খেজুরে থাকা প্রাকৃতিক শর্করা যেমন গ্লুকোজ দ্রুত মানবদেহে শক্তি সরবরাহ করে থাকে যা শরীর ও মনকে সতেজ রাখে। খেজুরে থাকা উপাদান মানুষের পরিশ্রমের পর শারীরিক ক্লান্তি দূর করতে সহায়তা করে। খেজুরে থাকা প্রাকৃতিক চিনি, ভিটামিন বি, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মানবদেহের শক্তি বৃদ্ধিতে এবং পেশি ও স্নায়ু শক্তিশালী করতে সহায়তা করে। খেজুরে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের কোষগুলোকে রক্ষা করে এবং তা বিপাক ক্রিয়ার উন্নতিতে সহায়তা করে।
যার ফলে মানবদেহে সামগ্রিক শক্তি পায়। খেজুর মানবদেহের হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে যা যৌন শক্তি ও শারীরিক কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। খেজুরে থাকা ফাইবার হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ দূর করে। খেজুরে থাকা দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় ফাইবার হজম প্রক্রিয়া উন্নত করার মাধ্যমে ডায়রিয়া এবং কোষ্ঠকাঠিন্য এর মতো সমস্যা সমাধানের সহায়তা করে। খেজুরে বিদ্যমান ফাইবার পরিপাকতন্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে যা অন্ধের সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে ভূমিকা পালন করে।
শিক্ষা বাজার এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url