গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা কেমন হবে
গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা নির্ধারণে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। গর্ভধারনের পর গর্ভবতী মায়ের থেকেই নিজের এবং নিজের গর্ভের সন্তানের সুস্বাস্থ্য রক্ষায় সাধারন দিনের তুলনায় বিশেষ ধরনের যত্ন নিতে হবে। সেই বিশেষ ধরনের যত্নের অন্যতম হল সুষম খাদ্যাভ্যাস।
কেননা গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর সুস্থ বিকাশের জন্য সুষম খাদ্যাভ্যাস নিয়ম অনুযায়ী মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং সে অনুযায়ী আপনার খাদ্যাভ্যাস বা খাবার তালিকা নিয়ন্ত্রণ করুন।পেজ সূচিপত্রঃ গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা কেমন হবে
গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা কেন প্রয়োজন
গর্ভবতী মায়ের জন্য খাবার তৈরি করার নিয়ম
গর্ভবতী মায়ের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান
প্রথম ৩ মাসে গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা
গর্ভবতী মায়ের ৩ থেকে ৬ মাসের খাবারের তালিকা
গর্ভবতী মায়ের ৬ থকে ৯ মাসের খাবারের তালিকা
গর্ভাবস্থায় যেসব খাবার এড়িয়ে চলা উচিত
গর্ভবতী মায়ের খাবারের তালিকা
গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা, শুধু এই সময় না জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে
স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু
গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের জন্য এই নিয়ম মেনে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনার
সন্তানের বেড়ে ওঠা, তার বিকশিত হওয়া, তার সঠিক ওজন বজায় রাখার জন্য সুষুম
খাবারের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। আপনার সন্তানের সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণ এর জন্য
গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের জন্য কোন খাবার প্রয়োজনীয়তা জেনে নেওয়া
আবশ্যক।
গর্ভধারণের পর থেকেই নিজের এবং নিজের গর্ভে থাকা সন্তানের জন্য রক্ষায় বিশেষ
যত্ন গ্রহণ করতে হবে। এবং এ যত্নের প্রধান বা অন্যতম অংশ হলো খাদ্য তালিকা
নির্বাচন করা। গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসের খাদ্য তালিকায় ফলিক এসিড,
ক্যালসিয়াম, ওমেগা ৩, ফ্যাটি এসিড, জিংক এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। এসব
উপাদান যুক্ত খাবার আপনার ব্রণের বৃদ্ধি অন্তর বিকাশে সহায়তা করে। এসব উপাদান
যুক্ত খাবার শিশুর রোগ বা ত্রুটি রোধে সহায়তা করে থাকে।
আরও পড়ুনঃ
রাতে মধু খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা কেন প্রয়োজন
গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা নির্ধারণ করা খুবই জরুরী। কেননা গর্ভাবস্থায় একজন
মায়ের দৈনিক পুষ্টির চাহিদা পুরুনে সুষম বা স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য রয়েছে রয়েছে
কিনা তার নিশ্চিত করা। যা মায়ের পুষ্টিগত চাহিদা নির্ধারণ করে এবং তা পূরণ করে।।
এই তালিকায় সেসব খাবার বা পানীয় সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে, যা গর্ভাবস্থায়
মায়ের সুস্থ থাকা এবং সঠিক পুষ্টি উৎপাদনে সহায়তা করে। এর মাধ্যমে গর্ভবতী
মায়ের বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান যেমন ভিটামিন, খনিজ, ক্যালোরি এবং প্রোটিন এসব
নির্দিষ্ট পরিমাণে পূরণ করা সম্ভব হয়।
একটি সুসজ্জিত এবং সঠিক খাবার তালিকা গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের অতিরিক্ত ওজন
বৃদ্ধি, পুষ্টি ঘাটতি জনিত সমস্যা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুকি রোধ করতে
সহায়তা করে। গর্ভাবস্থায় এই খাদ্য তালিকা গর্ভবতী মায়েদের তোদের আসন্ন
সন্তানের সর্বোচ্চ বৃষ্টি নিশ্চিত যেসব খাদ্যের প্রয়োজন তা তারা নিয়মিত খেতে
এবং মনে রাখতে পারবেন। একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য তার শারীরিক ও মানসিক বিকাশের
জন্য বিভিন্ন প্রকারের পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবারের প্রয়োজন হয়, যা একটি তালিকা
অনুযায়ী চললে সর্বোচ্চ ফলাফল পাওয়া যায়।
গর্ভবতী মায়ের জন্য খাবার তৈরি করার নিয়ম
গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা কিভাবে তৈরি করা যায় আসুন জেনে নেই। একটি খাবার
তালিকা তখনই পূর্ণতা পায় যখন এই তালিকায় মানব দেহের জন্য প্রয়োজনীয় সব
পুষ্টিকর উপাদান যুক্ত স্বাস্থ্যকর খাবার সেই তালিকায় যুক্ত থাকে। আসন মানব
দেহের জন্য প্রয়োজনীয় সবগুলো খাদ্য উপাদান যুক্ত স্বাস্থ্যকর খাবার
প্রতিদিনের খাবারের তালিকা কিভাবে করা যায় বিস্তারিত জেনে নেই।
আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ফলমূল, শাকসবজি, শস্য, আমিষ, শর্করা এবং
ফ্যাট জাতীয় খাবার রাখা উচিত। গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা পরিপূর্ণ করার জন্য
আরও খেয়াল রাখতে হবে যে, ক্যালসিয়াম, আয়রন, আয়োডিন, কোলিন, ভিটামিন এ,
ভিটামিন বি৬, ভিটামিন বি১২,ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি এবং ফলিক এসিড সংযুক্ত খাবার
আছে তা নিশ্চিত করতে হবে। কেননা একজন গর্ভবতী মায়ের গর্ভধারণের শুরু থেকেই এসব
ভিটামিন ও খনিজ উপাদান যুক্ত খাবারের প্রয়োজন হয়।
গর্ভবতী মায়ের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান
গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা তৈরির সময় প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ
খাবার রাখতে হবে। এই খাবার তালিকায় ফলিক অ্যাসিড, আয়রন, ক্যালসিয়াম,
প্রোটিন, ওমেগা৩ এবং ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ খাবার করতে হবে। উপরে উল্লেখিত এগুলোর
উপর একটা একটা করে আলোচনা করা হলো :
ফলিক অ্যাসিড : ফলিক এসিড ভিটামিন বি এর অন্তর্ভুক্ত পুষ্টিকর উপাদান
যা বল তাই গর্ভবতী মায়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি
ভ্রুণের স্পাইনা বিফিডা এবং অ্যানেনসেফলি প্রতিরোধে সহায়তা করে। গর্ভাবস্থার
প্রথম তিন মাস ফলিক এসিড সমৃদ্ধ খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণ গ্রহণ করা
উচিত।
আয়রন : আয়রন এমন একটি খনিজ সমৃদ্ধ উপাদান যা মানব দেহের হিমোগ্লোবিন
উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এবং এই আয়রন মানুষের দেহে অক্সিজেন
বহনে সহায়তা করে। গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের শরীরের রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধি
পায় সেজন্য আয়রনের চাহিদা ও বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। আয়রন যুক্ত খাবারের অভাবে
অ্যানিমিয়া রোগও হতে পারে, যা গর্ভবতীর ক্লান্তি, দুর্বলতা এবং প্রসবের ঝুঁকি
বাড়িয়ে দেয়।
ক্যালসিয়াম : গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের জন্য ক্যালসিয়াম
ভ্রনের বিকাশে সাহায্য করে। ক্যালসিয়াম এবং ভবিষ্যতে হাড়ের ক্ষয়জনিত রোগ
থেকে মুক্তি দিতে সহায়তা করে।
প্রোটিন : প্রোটিন গর্ভবতী মায়ের ভ্রনের মস্তিষ্ক এবং সার্বিক বৃদ্ধি
বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি গর্ভবতী মায়ের দেহের কোষের মেরামত ও
নতুন কোষ তৈরিতে সহায়তা করে থাকে।
ওমেগা-৩ : গর্ভবতী মায়ের জন্য ওমেগা ৩ এই ফ্যাটি এসিড টি বিশেষ করে
ভ্রুণের মস্তিষ্ক ও চোখের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এবং এটি
গর্ভবতী মায়ের মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়তা করে থাকে
আরও পড়ুনঃ
খালি পেটে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
প্রথম ৩ মাসে গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা
গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকায় প্রথম তিন মাসের খাবারের তালিকা কিভাবে করা যায় জেনে নিন। গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য প্রথম তিন মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকে। কেননা এই সময়ে ভ্রুণের প্রাথমিক বিকাশ ঘটে থাকে। সেজন্য এই সময়ে শিশুর পুষ্টিগত ভিত্তি স্থাপন শিশুর ভবিষ্যৎ সুস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য প্রথম তিন মাসে ভিটামিন, ফলিক এসিড এবং খনিজ উপাদানের উপর জোর দেওয়া উচিত। আমরা ইতিমধ্যেই উপরের উল্লেখিত এসব উপাদানের কার্যকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করেছি।
গর্ভবতী মায়ের জন্য প্রথম তিন মাস সকালবেলা বমি বমি ভাব ও মাথা ঘুরতে পারে এই
সময়ে একসাথে বেশি খাবার না খাওয়া উত্তম। বেশি বেশি খাবার খাবেন কিন্তু অল্প
অল্প করে কিছুক্ষণ পরপর নিয়মিত উচিত। যা গর্ভবতী মায়ের অস্বস্তি কমাতে সহায়তা
করে বমি বমি ভাব ও মাথা ঘোরানো থেকে মুক্তি মিলে। এ সময় আপনি বিস্কিট জাতীয়
খাবার অথবা ফলমূল জাতীয় খাবার খেতে পারেন যা আপনার বিকল্প হিসেবে কাজ করবে। এ
সময় পর্যাপ্ত পানি খাওয়া উচিত। যার শরীরে তাপমাত্রা ও টক্সিন নিয়ন্ত্রণে
সহায়তা করে।
গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য প্রথম তিন মাস বিভিন্ন ভিটামিন, খনিজ এবং
ফাইবার সমৃদ্ধ শাকসবজি খাওয়া উচিত যা হজমশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এ সময়ে
সমৃদ্ধ ফল যেমন লেবু কমলালেবু খাওয়া যা আয়রন শোষণে সাহায্য করে এবং শরীরের
ইমিউন সিস্টেম কে শক্তিশালী করে। এ সময় আরো খাবার যেমন ডাল ও বাদাম বেশি বেশি
খাওয়া কেননা এগুলো বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজের অসাধারণ উৎস। যা গর্ভবতী
মায়ের শরীরের শক্তি সরবরাহ করো এবং হজমে সাহায্য করে।
গর্ভবতী মায়ের ৩ থেকে ৬ মাসের খাবারের তালিকা
প্রতি মায়ের খাবার তালিকা তিন মাসের পর কিছুটা পরিবর্তন করতে হয়। গর্ভবতী
মায়ের খাবারের তালিকা কেমন হবে সে সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
গর্ভাবস্থায় তিন থেকে ছয় মাসে ভ্রুণের বৃদ্ধ ও বিকাশ দ্রুতগতিতে ঘটতে থাকে।
তিন থেকে ছয় মাসের এই সময়টাতে গর্ভবতী মায়ের পুষ্টি চাহিদা অনেকটা বৃদ্ধ। এ
সময় বিশেষ করে মায়ের প্রোটিন, ক্যালসিয়াম এবং আয়রনের চাহিদা বৃদ্ধি পায়।
সেজন্য এই সময়টাতে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খাওয়ানো উচিত। নিচে তার
কিছু আলোচনা করা হলো।
গর্ভবতী মায়ের তিন থেকে ছয় মাসে এ সময় প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন দুগ্ধ জাত
পণ্য দুই, দুধ ও ঘি ক্যালসিয়ামের সর্ব উৎকৃষ্ট উৎস হিসেবে কাজ করে। যা
গর্বে থাকা ভ্রুণের হাড়ের বৃদ্ধি ও মজবুত এবং দাঁতের বিকাশে সাহায্য করে। এ
সময়ে যেসব গর্ভবতী মায়েরা নিরামিষ খেয়ে থাকে তাদের জন্য প্রোটিনসমৃদ্ধ
উদ্ভিজ্জ দুধ যেমন বাদামের দুধ, সয়া দুধ, অন্যান্য উদ্ভিদভিত্তিক দুধ নিরামিষ
মায়েদের জন্য ক্যালসিয়ামের অন্যতম ভালো উৎস।
গর্ভবতী মায়ের তিন থেকে ছয় মাসের এই সময়ে অ্যানিমিয়া দেখা দিতে পারে। এই
এনিমিয়া প্রতিরোধে আয়রন যুক্ত খাবার শাকসবজি মাংস এবং ডাল নিয়মিতভাবে
পরিমাণমতো খাওয়া উচিত। পালং শাক, ব্রকলি অন্যান্য সবুজ শাকসবজি আইরন এর ভালো উৎস
যা অ্যানিমিয়া রোগ প্রতিরোধে সাহায্যকারী। তাছাড়াও লাল মাংস বিশেষ করে গরুর
মাংস হিমোগ্লোবিনের প্রধান উপাদান হিসেবে কাজ করে। যা মায়ের দেহে অক্সিজেনের
সঞ্চালনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবারের সাথে গ্রহণ
করলে আয়রনের শোষণ বৃদ্ধি পায়।
গর্ভবতী মায়ের ৬ থেকে ৯ মাসের খাবারের তালিকা
গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা গর্ভাবস্থায় ছয় মাস পরে কিছুটা পরিবর্তন হয়।
গর্ভবতী মায়ের ৬ থেকে ৯ মাসের খাবার তালিকার বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। ৬ থেকে ৯
মাস এই সময়ে গর্ভবতী মায়ের জন্য পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ খাবার নিশ্চিত করা যা
গর্ভবতী মায়ের ভ্রনের শেষ মুহূর্তের বৃদ্ধি এবং বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন
করে। বিশেষ করে এ সময়ে শারীরিক এবং মানসিকভাবে প্রসবের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ
করতে সহায়তা করে।
এক কথায় ৬ থেকে ৯ মাস গর্ভবতী মায়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়। সেজন্য
এ সময় পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবারের উপর বিশেষভাবে জোর দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। ভ্রুণের
মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিডের গুরুত্ব অনেক বেশি। সেজন্য এ সময়
সামুদ্রিক মাছ খাওয়া উচিত কেননা এতে রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিডের
সর্বোৎকৃষ্ট উৎস অথবা সামুদ্রিক মাছের বিকল্প হিসেবে আখরোট একটি গুরুত্বপূর্ণ
ফ্যাটিও অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার। যা ভ্রুণের মস্তিষ্ক বিকাশে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা পালন করে।
গর্ভাবস্থায় যেসব খাবার এড়িয়ে চলা উচিত
গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা তে যেসব খাবার এড়িয়ে চলা উচিত সেগুলো সম্পর্কে
বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। গর্ভাবস্থায় গর্ভবত মায়েদের জন্য কিছু খাবার থেকে
অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তা গর্ভধারণে সৃষ্টি করতে পারে, গর্ভধারণকালে আপনাকে
যেসব খাবার এড়িয়ে চলতে হবে সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
গর্ভাবস্থায় যেসব খাবার এড়িয়ে চলা উচিত তার মধ্যে অন্যতম হল কাঁচা দুধ তৈরি
কোন খাবার। কাঁচা দুধে লিস্টোরিয়া নামের এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকে যা
লিস্টেরিওসিস নামক এক ধরনের রোগ তৈরি হতে পারে। যে কারণে গর্ভধারণের সময়য
বিভিন্ন রকম জটিলতার সম্মুখীন হতে পারেন। মেয়াদোত্তীর্ণ কোন খাবার খাওয়া
যাবেনা কারণ মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার ফলে সেগুলোতে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে পারে। যা
গর্ভবতী মায়ের হজম জনিত বা পেটের সমস্যা করতে পারেন। কাঁচা বা কোন খাওয়া থেকে
বিরত থাকতে হবে কেননা এতে ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে।
গর্ভাবস্থায় কাঁচা আদা সিদ্ধ অথবা পুরোপুরি রান্না না হওয়া পর্যন্ত মাছ-মাংস
খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কেননা এগুলোতে স্যালমনিলা ও listorier মতো ব্যাকটেরিয়া
থাকতে পারে। এবং কাঁচা বা আধা সেদ্ধ মাছে ব্যাকটেরিয়া ও পরজীবী থাকতে পারে।
গর্ভবতী মায়েদের জন্য কলিজা খাওয়া সম্পূর্ণভাবে নিষেধ করা থাকে। কলিজায় প্রচুর
পরিমাণে আয়রন ও এটি ডাক্তার বা বিশেষজ্ঞরা গর্ভবতী মায়েদের খেতে নিষেধ করে
থাকেন কেননা উচ্চ মাত্রায় ভিটামিন এ থাকে যা গর্ভবতীর মাংসে বিষক্রিয়ার
ঝুকি বাড়ায়।
গর্ভবতী মায়ের শারীরিক দুর্বলতা দূর করার নিয়ম
গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা তে এমন কিছু খাবার রাখা উচিত যা গর্ভবতীর শারীরিক
দুর্বলতা দূর করতে সহায়তা করে। গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের দুর্বলতা রোধ করতে
কার্বোহাইড্রেট ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। কার্বোহাইড্রেট
এর ক্ষেত্রে শস্য জাতীয় শাকসবজি জাতীয় এবং মধ্যে কার্বোহাইডেট শক্তি সরবরাহ
করতে সক্ষম হয়। স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এর ক্ষেত্রে এভোকেডো, অলিভ অয়েল এবং আখরোট
এর মত স্বাস্থ্যকর ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত যারা শারীরিক দুর্বলতা রোধ
ভ্রনের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
হাইড্রেশন বা পানি শূন্যতার জন্য প্রচুর পরিমাণ পানি পান করতে হয় যা শিশুর
স্তন্যপানের সময় দুগ্ধ উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে থাকে। ক্যালোরির সামঞ্জস্য
বজায় রাখে এমন খাবার খাওয়ানো উচিত। দুগ্ধদানকারী মায়েদের জন্য অতিরিক্ত
ক্যালরি প্রয়োজন হয়। সেজন্য ক্যালোরি সমৃদ্ধ খাবারের মাধ্যমে অতিরিক্ত
ক্যালরির চাহিদা পূরণ করা উচিত। স্বাস্থ্যকর বা সুস্থ শিশুর জন্ম নিশ্চিত
করতে আল্লাহর অশেষ রহমত ও সুষম খাদ্যের গুরুত্ব অপরিসীম।
আরও পড়ুনঃ
খালি পেটে ছোলা খাওয়ার উপকারিতা
শেষ কথাঃ গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা কেমন হবে
আমরা এই আর্টিকেলটি পড়ে বুঝলাম যে গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্যকর
গর্ভাবস্থা এবং শিশুর সুস্থ জন্ম নিশ্চিত করার জন্য সুষম খাদ্যের অপরিসীম
ভূমিকা রয়েছে। পুষ্টি সমৃদ্ধ উপাদান হলো গর্ভবতীর গর্ভাবস্থার সময়ের একটি
গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা শুধু মায়ের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে না বরং
ভ্রূণের বৃদ্ধি ও বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গর্ভাবস্থায় পুষ্টিকর
খাবার খাওয়ার পাশাপাশি নিয়মিত বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
আমি আশা করছি যে, আলোচ্য বিষয়গুলো অনুসরণ করে সহজেই আপনি গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা তৈরি করতে পারবেন। আমাদের আর্টিকেলে কোন ভুল তথ্য চোখে পরলে বা কোন অভিযোগ
থাকলে আমাদের ওয়েব সাইটে দেওয়া ঠিকানায় যোগাযোগ করুন। ধন্যবাদ!
শিক্ষা বাজার এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url